দুঃখের আরেক নাম

আমাকে স্পর্শ করো, নিবিড় স্পর্শ করো নারী।
অলৌকিক কিছু নয়,
নিতান্তই মানবিক যাদুর মালিক তুমি
তোমার স্পর্শেই শুধু আমার উদ্ধার।
আমাকে উদ্ধার করো পাপ থেকে,
পঙ্কিলতা থেকে, নিশ্চিত পতন থেকে।
নারী তুমি আমার ভিতরে হও প্রবাহিত দুর্বিনীত নদীর
মতন,
মিলেমিশে একাকার হয়ে এসো বাঁচি
নিদারুণ দুঃসময়ে বড়ো বেশি অসহায় একা পড়ে আছি।
তুমুল ফাল্গুন যায়, ডাকে না কোকিল কোনো ডালে,
আকস্মিক দু’একটা কুহু কুহু আর্তনাদ
পৃথিবীকে উপহাস করে।
একদিন কোকিলেরো সুসময় ছিলো, আজ তারা
আমার মতোই বেশ দুঃসময়ে আছে
পাখিদের নীলাকাশ বিষাক্ত হয়ে গেছে সভ্যতার অশ্লীল
বাতাসে।
এখন তুমিই বলো নারী
তোমার উদ্যান ছাড়া আমি আর কোথায় দাঁড়াবো।
আমাকে দাঁড়াতে দাও বিশুদ্ধ পরিপূর্ণতায়,
ব্যাকুল শুশ্রুষা দিয়ে আমাকে উদ্ধার করো
নারী তুমি শৈল্পিক তাবিজ,
এতোদিন নারী ও রমনীহীন ছিলাম বলেই ছিলো
দুঃখের আরেক নাম হেলাল হাফিজ।

ভালবাসার সংজ্ঞা

ভালোবাসা মানে দুজনের পাগলামি,
পরস্পরকে হৃদয়ের কাছে টানা;

ভালোবাসা মানে জীবনের ঝুঁকি নেয়া,
বিরহ-বালুতে খালিপায়ে হাঁটাহাঁটি;

ভালোবাসা মানে একে অপরের প্রতি
খুব করে ঝুঁকে থাকা;

ভালোবাসা মানে ব্যাপক বৃষ্টি, বৃষ্টির একটানা ভিতরে-বাহিরে
দুজনের হেঁটে যাওয়া;

ভালোবাসা মানে ঠাণ্ডা কফির
পেয়ালা সামনে
অবিরল কথা বলা;

ভালোবাসা মানে শেষ হয়ে-
যাওয়া কথার পরেও
মুখোমুখি বসে থাকা।

এ কেমন ভ্রান্তি আমার

এ কেমন ভ্রান্তি আমার!
এলে মনে হয় দূরে স’রে আছো, বহুদূরে,
দূরত্বের পরিধি ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে আকাশ।
এলে মনে হয় অন্যরকম জল হাওয়া, প্রকৃতি,
অন্য ভূগোল, বিষুবরেখারা সব অন্য অর্থবহ-
তুমি এলে মনে হয় আকাশে জলের ঘ্রান।

হাত রাখলেই মনে হয় স্পর্শহীন করতল রেখেছো চুলে,
স্নেহ- পলাতক দারুন রুক্ষ আঙুল।
তাকালেই মনে হয় বিপরীত চোখে চেয়ে আছো,
সমর্পন ফিরে যাচ্ছে নগ্ন পায়ে একাকী বিষাদ-ক্লান্ত করুণ ছায়ার মতো
ছায়া থেকে প্রতিচ্ছায়ে।
এলে মনে হয় তুমি কোনদিন আসতে পারোনি..

কুশল শুধালে মনে হয় তুমি আসোনি।
পাশে বসলেও মনে হয় তুমি আসোনি।
করাঘাত শুনে মনে হয় তুমি এসেছো,
দুয়ার খুললেই মনে হয় তুমি আসোনি।
আসবে বললে মনে হয় অগ্রিম বিপদবার্তা,
আবহাওয়া সংকেত, আট, নয়,
নিম্নচাপ, উত্তর, পশ্চিম-
এলে মনে হয় তুমি কোনদিন আসতে পারোনি।

চ’লে গেলে মনে হয় তুমি এসেছিলে,
চ’লে গেলে মনে হয় তুমি সমস্ত ভূবনে আছো।

আমি খুব অল্প কিছু চাই !

আমাকে ভালবাসতে হবে না,
ভালবাসি বলতে হবে না.
মাঝে মাঝে গভীর আবেগ
নিয়ে আমার ঠোঁট
দুটো ছুয়ে দিতে হবে না.
কিংবা আমার জন্য রাত
জাগা পাখিও
হতে হবে না.
অন্য সবার মত আমার
সাথে রুটিন মেনে দেখা
করতে হবে না. কিংবা বিকেল বেলায় ফুচকাও
খেতে হবে না. এত
অসীম সংখ্যক “না”এর ভিড়ে
শুধু মাত্র একটা কাজ
করতে হবে আমি যখন
প্রতিদিন এক বার “ভালবাসি” বলব
তুমি প্রতিবার
একটা দীর্ঘশ্বাস
ফেলে একটু
খানি আদর মাখা
গলায় বলবে “পাগলি”

বিশ্বাস কর!